খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পর এবার রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরব বিদেশিরা। এই তিন সিটি নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তার জন্য সরকারের প্রতি তারা আহ্বানও জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরিবেশেরই প্রতিফলন ঘটে থাকে জাতীয় নির্বাচনে। তাই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সম্পর্কে গতকাল ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধি দলের নেতা গানার উইগান্ড বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় ও সংসদ দুই ক্ষেত্রের নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ চায় ছোট-বড় সকল নির্বাচনে স্বচ্ছতা। জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে বিদেশি কূটনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের সরব উপস্থিতি ছিল। এসব নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা ছাড়াও ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জার্মানি ইত্যাদি দেশের কূটনীতিকরা মাঠপর্যায়ে থেকে নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে এখন থেকেই দৃষ্টি রাখছেন বিদেশি কূটনীতিকরা।সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। ওই বৈঠকের পর বার্নিকাট আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যতটা সম্ভব অনিয়মমুক্ত করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশ সরকার যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করে এটাই আশা করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বৈঠকে মার্শা বার্নিকাট গাজীপুরের নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হয়েছে বলে জানান। এছাড়া খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনগুলো যতটা সম্ভব অনিয়মমুক্ত করার জন্য সরকারের অবস্থান কী সেটাও জানতে চান বার্নিকাট। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এর আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরিবেশেরই প্রতিফলন ঘটে থাকে জাতীয় নির্বাচনে। তাই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে জানানো হয়েছে মার্শা বার্নিকাটকে।আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই নির্বাচনে ইতোমধ্যে দৃষ্টি রাখতে শুরু করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সরকারের প্রতি এই আহ্বানও জানিয়েছেন তাদের অনেকেই।এদিকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করে ব্রিটেনের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের এশিয়া ও প্রশান্ত অঞ্চলবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য আগাম শুভকামনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ সময় তিনি আরও জানান, লন্ডনে তিনি বিএনপির প্রতিনিধিদের সাথে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের স্বার্থেই প্রয়োজন সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন। বাংলাদেশের নির্বাচনি আইনের অধীনে থাকা দলগুলোর স্বার্থেও তা হওয়া উচিত। পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সকল দলের অংশগ্রহণের ব্যাপারেও তিনি এ সময় আশা করেন। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট-ই শুধু নয়, পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই শান্তিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন।প্রসঙ্গত, প্রতিটি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন বিদেশি কূটনীতিকরা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেন। আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও বিদেশি কূটনীতিকরা পর্যবেক্ষণ করবেন। এবারের তিন সিটি কর্পোরেশনে বেশিরভাগ কূটনীতিক মাঠপর্যায়ে গিয়ে সরাসরি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে না থাকলেও নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। আবার কোনো কোনো দেশের কূটনীতিকরা সরাসরি মাঠপর্যায়ে গিয়েও নির্বাচন পরিস্থিতি দেখবেন বলে কূটনীতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।
Design & Developed BY- zahidit.com
Leave a Reply